স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বরগুনার পাথরঘাটায় দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন (দাদু)। অপরদিকে দলীয় মনোনয়ন না-পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক থেকে বহিষ্কৃত মোস্তফা গোলাম কবির।
স্থানীয় এক বিশ্বস্ত সূত্র বলছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে কাজ করছেন স্থানীয় ইউপি চয়োরম্যান মো. মিজানুর রহমান রূপক-এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এ অভিযোগ করেন। তারা বলেন- নৌকা প্রতীক নিয়ে যিনি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে তিনিই এখন আবার নৌকার বিপক্ষে কৌশলে কাজ করছেন। যেমন-নৌকার পক্ষে প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের যত নেতাকর্মী তফসিল ঘোষনার পর মাঠে কাজ করেছেন তাদেরকে চয়োরম্যান গত ১০-১২দিন যাবৎ বিভিন্ন হাট বাজারে এবং আ’লীগের অনুষ্ঠানে তার সফরসঙ্গি করে রেখেছেন। যাতে ওই সব নেতাকর্মীরা গনসংযোগ কিংবা নৌকার পক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা না করতে পারেন।
অভিযোগ আছে-গত পাচ দিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা কবির উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারে এলাকার নিজ বাড়ীতে তার সাথে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রূপক। যা প্রত্যক্ষ করেছে ওই বাড়ীর সামনে কয়েকশ নেতাকর্মী। এসব অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে বহিষ্কৃত মোস্তফা গোলাম কবিরের সর্মথনকারী অনেকের বক্তব্যেও। ভূক্তভোগিরা জানান, বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবিরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এ যেন ঘরের শিক ঘরের লোকেরা কাটার মত অবস্থা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন, সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের আরো একাধিক পদ পদবি ধারী নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে নৌকার বিপক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ত্যাগী নেতাকর্মীরা জানান, মেয়র সাহেব সুপরিকল্পিত ভাবে নৌকার বিপক্ষে এদেরকে মাঠে নামিয়েছেন।পাশাপাশি নৌকার পরাজয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্নভাবে কুটকৌশল অবলম্বন করছেন মেয়র এবং চেয়ারম্যান।
ভূক্তভোগিরা জানান, “এখন যদি আমি আমার নাম পত্রিকায় প্রকাশ পায় পরের দিন আমার বাসা বাড়ীতে হামলা হবে মিথ্যা মামলা হবে। তখন আপনাদের (সাংবাদিকদের) খুজে পাওয়া যাবেনা। যে কারণে দয়া করে আমাদের নামগুলো প্রকাশ করবেননা।” এদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে,আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও উপজেলার আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ না-করে আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করাসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীর আনারসের ভোটের মাঠে যোগ দিতে পারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না-করা বিএনপি।
সূত্র বলছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা গোলাম কবির বিগত দিনে জাতীয় পার্টির একজন সক্রিয় কর্মী থাকার সুবাধে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটররা নৌকার বিকল্প হিসেবে মোস্তফা গোলাম কবিরের আনারস প্রতীকে ভোট দিতে পারেন। এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাব্বির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি আওয়ামী লীগের একটি অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন, কতিপয় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে, তবে এতে নৌকার ওপর কোন প্রভাব পড়বে না।
এদিকে পাথরঘাটা উপজেলায় আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন (দাদু) কাছে নির্বাচনী হালচাল সম্পর্কে বর্তমান পরিস্থিতি কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ও আমার পরিবার জন্ম সূত্রে আওয়ামীলীগ। কবিরের বংশে কোন ব্যাক্তি আওয়ামীলীগ করেনাই সবাই বিএনপি জামাতের সাথে সম্পৃক্ত ছিল এবং বর্তমানেও আছে। কবির জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপেক্ষা ও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সতন্ত্র ভাবে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নৌকা প্রতীকের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে। সে বঙ্গবন্ধুর পোস্টার ছিরে ফেলেছে। তাই দল তার বির“দ্ধে ব্যাব¯’া নিয়ে বহিস্কার করেছে। তিনি আরো বলেন নির্বাচনের বাকি মাত্র আর একটি রাত,আর কবির এই রাতেই তার অবৈধ টাকার বিনিময়ে ভোট কিনতে পারে বলে মনে করেন এই আওয়ামীলীগ প্রার্থী।
গতকাল শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধার দিকে উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারে আনরস মার্কার নির্বাচনী অফিসে হামলার ঘটনার কথা উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, মুন্সিরহাট বাজারে আনরস মার্কার নির্বাচনী অফিস তার নিজ বাড়ির কাছে সেখানে কিভাবে আমার লোকজন হামলা চালায়,নিজের অফিস নিজের লোক দিয়ে ভেঙ্গে আওয়ামীলীগ কর্মীদের উপরে দোষ চাপানোর চেস্টা করছে।কবির ছিল বিএনপি জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ভাঙচুর,নাশকতা,জালাও পোরাও এগুলো কিভাবে করতে হয় তা কবিরের ভালো করেই জানা আছে।
তিনি কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন,কবিরের অবৈধ টাকার বিনিময় আজ রাতে টাকা নিয়ে তার বড় ভাই মোঃ আলম এর ছেলে সাবেক উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ন আহবায়ক শাহেদের নেতৃত্বে ছাত্র দলের কর্মীদের মাধ্যমে ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে ভোট কেনার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এব্যারে পাথরঘাটা,বরগুনা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আইউব আলী হাওলাদার জানান, বিষয়টি আমাদের কেউ অবগত করেনি। যে কারণে আমরা কিছুই জানিনা। এরকম কোন অভিযোগ আমাদের কাছে কেউ দেয়নি। আর যদি এরকম কোনো ঘটনার সত্যতা পেয়ে থাকি তবে সেটা অবশ্যই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন তাহলে অবশ্যই আচরণবিধি লঙ্ঘনকারিদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহন করবো । উল্লেখ্য, এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৭৫৯ জন। এদের মধ্যে পুর“ষ ভোটার ৫৯৯২১ এবং মহিলা ভোটার ৬০৮৩৮ জন। আগামী ৩১ মার্চ ৫১টি ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply